Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
গৌরব সৌরভ প্রকৃতিকন্যা (সিলেট) সরকারি দপ্তর মানেই কাঠখোট্টা যত সব অভিজ্ঞতা। কিন্তু সিলেটে জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বর একটু ভিন্ন। এখানে এসে যে কেউ মুগ্ধ হবেন। কারণ, এক দেয়ালের ভেতর রয়েছে পুরো সিলেটের ঐতিহ্য। রয়েছে ‘সৌরভ’, ‘গৌরব’ আর ‘প্রকৃতিকন্যা’। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী ও পর্যটন স্থানগুলোর উপস্থাপনা ‘গৌরব’। ফুল-ফল ও গাছের বাগান ‘সৌরভ’। সবুজ টিলা আর চা-বাগানোর মনোরম দৃশ্যসংবলিত ম্যুরাল হচ্ছে ‘প্রকৃতিকন্যা’। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা ‘হৃদয়ে ৭১’ এবং সিলেটের ‘নাগরী লিপি’র ম্যুরাল। সব মিলিয়ে পুরো জেলা প্রশাসন চত্বর যেন এক টুকরো সিলেট। সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও পর্যটনকে তুলে ধরতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। ‘গৌরব’, ‘সৌরভ’ ও ‘প্রকৃতিকন্যা’ ছাড়াও নাগরী লিপি ম্যুরাল স্থাপন এবং লাইব্রেরি সংস্কার করে তাতে নাগরী লিপি কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। ইতিহাস সংরক্ষণের অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসনের ব্যবহৃত প্রথম জিপ গাড়িটিও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে। জেলা প্রশাসনের সহায়তায় অটিস্টিক শিশুদের জন্য পরিচালিত ‘সিলেট আর্ট অ্যান্ড অটিস্টিক স্কুল’-এর দুই শিক্ষক তরুণ চিত্রশিল্পী ইসমাইল গণি হিমন ও আলী দেলোয়ারের তত্ত্বাবধানে কাজগুলো হচ্ছে। প্রকল্পগুলো ঘুরিয়ে দেখানোর পাশাপাশি কালের কণ্ঠ’র কাছে পুরো পরিকল্পনারও বর্ণনা দিলেন দুই শিল্পী। পর্যটন স্থানগুলোর সংগ্রহশালা ‘গৌরব’ : জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের প্রধান ফটক পেরোলেই ডান পাশে ত্রিশ শতক জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ‘গৌরব’। সিলেটি ঐতিহ্যের স্মারক আলী আমজাদের ঘড়িঘরের প্রতিকৃতি গৌরবের প্রবেশ পথেই স্বাগত জানায়। এরপর কৃত্রিমভাবে ইট-সুরকির তৈরি সুরমা নদীর ওপর ঐতিহ্যবাহী কিন ব্রিজ। কিন ব্রিজ পেরিয়েই সিলেটের পরিচিত পাহাড়-টিলা। মূলত সিলেটের সীমান্তবর্তী জাফলংয়ের মেঘালয় পাহাড় ও তার মধ্য দিয়ে বয়ে চলা ঝরনাগুলো এখানে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। ঘড়িঘরের ডান দিকে ‘ড্রাই ওয়াল পেইন্টিং’ মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশ সিলেটের চাবাগান ও টিলার চিত্র। চাবাগান দেখতে দেখতে সামনে গেলেই চোখের সামনে ধরা দেয় দেশের একমাত্র সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুল। কৃত্রিমভাবে তৈরি হলেও তাতে মূল জলাবনের আদল দেওয়ার চেষ্টার কমতি করেননি শিল্পীরা। জলাবনের পাশ দিয়ে বাঁয়ে বাঁক নিলেই হাজির ‘বিছানাকান্দি’। সিলেটি ফুল-ফল ও গাছের বাগান ‘সৌরভ’ : জেলা প্রশাসনের সীমানার অভ্যন্তরে উত্তর-পূর্ব পাশে কালেক্টর মসজিদের ঠিক পেছনে ৩০ শতক জায়গা নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সৌরভ। যেখানে সাতকরা, নাগা মরিচ ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন প্রজাতির লেবুগাছ, ফুল, ফল ও ঔষধি গাছ একসঙ্গে দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। সৌরভে ঢোকার মুখেই বাগান বিলাস দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাবে। ছোট্ট ফটক অতিক্রম করে ছোট্ট একটি সাঁকো পেরোতে হবে মূল বাগানে পৌঁছাতে। সাঁকোর নিচের ছোট কৃত্রিম জলাশয়ে ফুটে থাকা পদ্ম ফুলের সঙ্গে সরাসরি পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবে নগরে বেড়ে ওঠা আমাদের নতুন প্রজন্ম। বই পড়ুক তরুণ প্রজন্ম : তরুণ প্রজন্মকে বইপড়ায় উৎসাহিত করতে কালেক্টরেট লাইব্রেরিকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন সিলেটের বর্তমান জেলা প্রশাসক। তাই ওয়াইফাই সুবিধার চেয়ে লাইব্রেরিকে সমৃদ্ধ করতে বেশি আগ্রহ তাঁর। পাশাপাশি সিলেটি ভাষার বর্ণমালা নাগরীলিপিকে আবারও আলোতে নিয়ে আসতে তিনি নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় গেলেই চোখে পড়বে উত্তর পাশের দেয়ালজুড়ে লাগানো নাগরীলিপির ম্যুরাল। নাগরীলিপিকে মানুষের সামনে তুলে ধরতে এবং এর চর্চায় আগ্রহী করে তুলতে পাশাপাশি কালেক্টরেটের লাইব্রেরিতে নাগরীলিপি কর্নার স্থাপন করছে জেলা প্রশাসন। ‘হৃদয়ে ৭১’ মুক্তিযুদ্ধের স্থায়ী প্রদর্শনী : জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দ্বিতীয়তলার লম্বা করিডরে পা রাখলেই চোখ আটকে যাবে দেয়ালের খোপগুলোতে লাগানো মুক্তিযুদ্ধের বিশাল সব আলোকচিত্রে। ডিজিটাল প্রিন্টের সাদা-কালো ছবিগুলোতে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের নানা মুহূর্তের চিত্র, যা মানুষকে মনে করিয়ে দেয় আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ ও ত্যাগের ইতিহাস। তরুণ চিত্রশিল্পী ইসমাইল গণি হিমন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সৃজনশীল কাজের অংশীদার হতে পেরে আমি আনন্দিত। সাধ্যমতো ভালো করার চেষ্টা করছি। ব্যয় যাতে কম হয় সেই বিষয়টিও মাথায় রেখে কাজ করছি। আশা করছি এই মাসের শেষের দিকে সব কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হবে। ’ জেলা প্রশাসক মো. রাহাত আনোয়ার বলেন, “সিলেটের পর্যটনের ‘ব্র্যান্ডিং’, মানুষের মাঝে সংস্কৃতির বিকাশ এবং শিশু-কিশোরদের হাতে-কলমে জানার সুযোগ করে দিতে এ রকম উদ্যোগ নিয়েছি। কারণ আমার এখানে বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনারসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা আসেন। ” ছবি ফাইল প্রকাশনের তারিখ ২০১৭-১১-৩০ আর্কাইভ তারিখ ২০১৮-০২-২৮
ছবি
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
23/11/2017
আর্কাইভ তারিখ
03/12/2017